অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের আহ্বান এসডিজি অর্জনে
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের ধারায় অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে এক অনুষ্ঠানে।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিকেএসএফ মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠানটির অর্থায়ন এবং বিশ্ব ব্যাংকের কারিগরি সহায়তায় ‘ওবিএ স্যানিটেশন মাইক্রোফিন্যান্স কর্মসূচি’ শীর্ষক প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানানো হয়।
পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, “সমাজে যারা অতিদরিদ্র, ঋণ নেওয়াও যাদের পক্ষে সম্ভব না, সেসব অতিদরিদ্র মানুষকে রেখে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। কেননা কাউকে বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব না। তাদের উন্নয়নে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তাদের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। তাদের পরামর্শ দিতে হবে, অনুদান দিতে হবে।”
এক হাজার ভিক্ষুককে পিকেএসএফ পুনর্বাসিত করেছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এক হাজার ভিক্ষুককে আমরা এক লাখ টাকা করে অনুদান দিয়েছি। যাদের মধ্যে ১৯ জন কাক্সিক্ষত পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি। বাকীরা সবাই স্বাবলম্বী হয়েছে। বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী হয়েছে।”
স্যানিটেশন মাইক্রোফিন্যান্স প্রকল্পের আওতায় পিকেএসএফ ‘স্যানিটেশন উন্নয়ন ঋণ’ চালু করেছে বলে জানান তিনি।
দেশের গ্রামীণ এলাকার স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন স্থাপন নিশ্চিত করতে এ প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামের দরিদ্র মানুষ সুদ ছাড়া ঋণ পেয়েছেন, যার ফলে তারা নিজেদের বাসার জন্য টয়লেট তৈরি করতে পেরেছেন। প্রকল্পটি পিকেএসএফের ২১টি সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে ৪২টি জেলার ২৩৭টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব কাজী শফিকুল আযম দেশের অনেক মানুষ অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এ প্রকল্পের আরও সম্প্রসারণ প্রয়োজন। সব এলাকায় এ কার্যক্রম নিয়ে যেতে হবে।”
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দেশে দারিদ্র্যের হার ২১ দশমিক ৮ শতাংশ এবং অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠী ১১ দশমিক ৩ ভাগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ঋণ দিয়ে সব মানুষের উন্নয়ন সম্ভব নয়, সেক্ষেত্রে যারা ঋণ নিতে পারছে না, তাদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কাজ করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে বিশ্ব ব্যাংকের প্রোগ্রাম লিডার (বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপাল) সঞ্জয় শ্রীবাস্তব বলেন, “এই ছোট প্রোজেক্টের সফলতা ও অভিজ্ঞতা এই ক্ষেত্রে সহায়তা বাড়ানো ও এই ধরনের প্রকল্প আরও বড় পরিসরে নেওয়ার বিষয়ে উৎসাহ দেয়।”
অনুষ্ঠানে পিকেএসএফ এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুল কাদের ‘ওবিএ স্যানিটেশন মাইক্রোফিন্যান্স’ প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
এ প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৭০ হাজার স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১ লাখ ৭০ হাজার ৬৭৯ টি ল্যাট্রিন স্থাপন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বর্তমানে বাংলাদেশে ৪০ শতাংশ লোক স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহার করছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবশিষ্ট ৬০ শতাংশ মানুষ এখনও অস্বাস্থ্যকর পিট ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। এ বিশাল জনগোষ্ঠীর বিদ্যমান পিট টয়লেটকে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটে পরিবর্তনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কৌশল নির্ধারনে পিকেএসএফ ও বিশ্ব ব্যাংক যৌথভাবে এ পরীক্ষামূলক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।